পাকিস্তান ও বাংলাদেশের খেলার শেষ বলটি নিয়ে ক্রিকেটের আইন কী বলে?
মিরপুরের শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সোমবার শেষ বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২ রান। বল করছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তার করা বল ক্রিজে ড্রপ করার পর ছেড়ে দেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ নাওয়াজ।
ম্যাচের শেষ বলটি ছিল মোহাম্মদ নাওয়াজের জন্য প্রথম বল। তিনি এই বলটি ড্রপ খাওয়া পর্যন্ত ব্যাটিং করতে তৈরি ছিলেন। কিন্তু তারপর হঠাৎ সরে দাঁড়ালে বলটা স্ট্যাম্পে গিয়ে লাগে। এতে মাঠে সাময়িক অস্থিরতা দেখা দেয়। আম্পায়াররাও নিশ্চিত ছিলেন না কী সিদ্ধান্ত নেবেন।
মাহমুদুল্লাহ তখন নাওয়াজকে কিছু একটা প্রশ্ন করেন এবং নাওয়াজের উত্তরে মনে হয়েছে বাংলাদেশের অধিনায়ক সন্তুষ্ট। এরপর আবার বল করলে নাওয়াজ চার মেরে দেন। ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান।
মাহমুদুল্লাহ আম্পায়ারেরও বেশ পেছন থেকে বলটা হাত থেকে ছোঁড়েন, যা ক্রিকেটের আইনে বৈধ, তবে সচরাচর এমনটা করতে দেখা যায় না।
জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকিনফোর বিশ্লেষক হেমান্ত ব্রার লিখেছেন, ‘পোলার্ড এটা নিয়মিতই করতেন। ডেনিস লিলির মতো বোলাররাও আম্পায়ারের পেছন থেকে বল ছেড়েছেন।’
এখানে তিনি বোলার ও ব্যাটসম্যান উভয়ের বিচক্ষণতার বাহবা দিয়েছেন, মাহমুদুল্লাহ নাওয়াজকে চমকে দিয়েছেন এবং নাওয়াজ সঠিক সময়ে সরে দাঁড়িয়েছেন যাতে এটা বল হিসেবে গণ্য না হয়।
বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রতিবেদক আরিফুল ইসলাম রনির মতে, ‘নিয়ম অনুযায়ী, বল খেলার আগ পর্যন্ত নানা কারণে ব্যাটসম্যান সরতেই পারেন। সামনে দিয়ে কোনো পোকা বা পাখি গেল, সাইটস্ক্রিনের সামনে বা ওপরে কেউ-কিছু নড়াচড়া করল বা মাঠেই কোনো অস্বস্তি, এরকম নানা কিছু। কিন্তু এখানে এসবের কোনোটিই হয়নি।’
অনেকেই বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। তাদের মতে রিয়াদ নাওয়াজের এই সরে দাঁড়ানো মেনে নিয়ে ক্রিকেট যে ভদ্রলোকের খেলা সেটার মান রেখেছেন।
পাকিস্তান বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫ উইকেটের জয় পেয়েছে। এ নিয়ে টানা আটটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হারলো বাংলাদেশ। এই সিরিজে পাকিস্তান বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করলো।
ম্যাচ বিশ্লেষণ
আজ টসে জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। টপ অর্ডার উইকেটে থিতু হলেও রান তুলতে পারেনি দ্রুত। ওপেনার নাইম ৫০ বল খেলে ৪৭ রান তোলেন। তিনি যখন আউট হন তখন আর দেড় ওভার বাকি ইনিংসের। ওয়ান ডাউনে নামা শামিম হোসেন ২২ ও আফিফ হোসেন ২০ রান করেন।
পাকিস্তানের মোহাম্মদ ওয়াসিম ১৫ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন।
১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করে পাকিস্তান। তবে অধিনায়ক বাবর আজম আজও সুবিধা করতে পারেননি। ১৯ রানে তিনি আউট হয়ে যান।
পাকিস্তানের হায়দার আলী ৩৮ বলে ৪৫ রান করে রানের গতি স্থিতিশীল রাখেন। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ৮ রান। তখন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৩ উইকেট নিয়ে নিলেও শেষ দিকের নাটকীয়তার পরে প্রয়োজনীয় রান তুলে ম্যাচ জেতান মোহাম্মদ নাওয়াজ।
এই ম্যাচে জয় দিয়ে পাকিস্তান বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করলো।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন