দেশে করোনার অমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে এবং তাতে আক্রান্ত হয়েছেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের দুই খেলোয়াড়। আজ শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেটি নিশ্চিত করেছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজ সেটি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমাদের যে দুই নারী ক্রিকেটারের শরীরে অমিক্রন ধরন পাওয়া গেছে, তাঁদের কোয়ারেন্টিনে রেখেছি। তাঁরা সুস্থ আছেন। তাঁদের যা যা চিকিৎসা দরকার, সেটি চলছে। মাঝেমধ্যেই পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে তাঁদের শরীরে এখন অমিক্রনের লোডটা কেমন আছে। হয়তো পুরোপুরি সেরে উঠতে দুই সপ্তাহ লাগবে। পুরোপুরি সুস্থ হলেই আমরা তাঁদের ছাড়তে পারব।’
এ দুজনের আশপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরও করোনা পরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ‘আমরা কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করছি এবং যাঁরা তাঁদের পাশে ছিলেন বা তাঁদের সংস্পর্শে এসেছেন, সবারই পরীক্ষা করা হয়েছে।’
জিম্বাবুয়েতে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ নারী দল। কিন্তু করোনার নতুন ধরন অমিক্রনের কারণে সেটি মাঝপথেই স্থগিত হয়ে যায়। র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকায় বাংলাদেশ নারী দল প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে। সেই আনন্দের মধ্যেই দল ১ ডিসেম্বর দেশে ফেরে।
কিন্তু ৬ ডিসেম্বর জানা যায়, দুই ক্রিকেটার করোনায় আক্রান্ত। আজ এল তাঁদের অমিক্রন ধরনেই আক্রান্ত হওয়ার খবর। বিসিবি চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা দুজনের অমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনেছি, তবে আইইডিসিআর আমাদের এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।’
জিম্বাবুয়ে থেকে ফেরার সময় বাংলাদেশ দল নামিবিয়া হয়ে ওমানের পর বাংলাদেশে পৌঁছায়। বাংলাদেশে আসার পর তাঁদের প্রথমে পাঁচ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। কিন্তু দুজনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরের পর তাঁদের দায়িত্ব নিয়ে নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাঁদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। এখনো রাজধানীর বিলাসবহুল একটি হোটেলেই কোয়ারেন্টিনে আছেন সব ক্রিকেটার।
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, পজিটিভ হওয়ার পর থেকে ওই দুই নারী ক্রিকেটার আলাদাভাবে আইসোলেশনে আছেন।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রন প্রায় ৬০টি দেশে শনাক্ত হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত এই ধরনে আক্রান্ত কারও মৃত্যু হয়নি। ব্যাপকভাবে জিনগত রূপ পরিবর্তনে সক্ষম এই ধরনের বিস্তার ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে অমিক্রনের প্রকোপে দক্ষিণ আফ্রিকায় মোট আক্রান্ত ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় জানিয়েছেন, ডেলটা ও বেটা ধরনের তুলনায় অমিক্রনের পুনরায় সংক্রমিত করার ক্ষমতা তিন গুণ বেশি। এ ছাড়া আগে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে গড়ে ওঠা প্রতিরোধব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার সক্ষমতাও অমিক্রনের রয়েছে।
স্বল্প পরিসরে চালানো এক গবেষণা শেষে ফাইজার ও বায়োএনটেক জানিয়েছে, করোনার অন্য ধরনগুলোর বিরুদ্ধে টিকার দুটি ডোজ যে পরিমাণ সুরক্ষা দিয়ে এসেছে, অমিক্রনের ক্ষেত্রে একই সুরক্ষা পেতে প্রয়োজন হবে বাড়তি একটি ডোজের।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন